ঢাকাশুক্রবার , ২৪ মার্চ ২০২৩
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মনের বিশালতা।

Noman
মার্চ ২৪, ২০২৩ ৫:৩৪ অপরাহ্ণ । ১৫৪ জন

বসন্ত আর অবেলায় আসা বৃষ্টিতে দক্ষিণের বাতাশ গায়ে শীতের ছোয়া দিচ্ছে। চারপায়ীতে হেলান দিয়ে কাথা খানা গায়ে মুড়িয়ে দিব্য কল্পনায় বিভোর করে দিয়ে সেদিনের কথা গুলো মস্তিষ্কে বলছে স্মৃতিচারণ করতে আমিও স্বায় দিলাম। কেননা মানুষ্যজাত ছোটবেলায় যেতে চায় বা অতীতে ফিরতে চায় আমিও ব্যতিক্রম নহে। মাধ্যমিকে যে কজন সহপাঠী ছিলো সবাই আমার প্রিয়দের তালিকায়। সকলের আলাদা গুণাগুন বিদ্যমান। চাপাবাজ খ্যাৎ এক দুরন্তর ছিলো। শয়তান কাওমীতে থাকতে পারেনা এমনি সেও পারে নাই। তাইতো ভন্ডদের দলে নাম লিখালো। ফ্যাশনে অভিজাত আর নিমাইভদ্র ছিলো আমার নিয়মিত বিদ্যালয়ে গমনের কারন। দুবেচারাই সহপাঠিনীর প্রেমে মশগুল। দুজনে আবার ভালো সখ্যতা। তা দেখে বাকিজনরা একটু বিস্মিত হত ঠিক কিন্তু হইহুল্লোরে চলছে দিন। জমাটবাধা প্রেমে দুজনের অবস্থায় পরিবর্তন দেখেছি। ও বলে রাখি ওরা শিমুল ও রাব্বী। শিমুল তার নিজের নামের সাথে একদম যায়না। আর রাব্বী তার প্রেমিকার ধার্য নাম।
রাব্বীকে বহুবার বলতে শুনেছি শিমুলের মন সায়মা নামক অপরুপার জন্য শিমুলের মত নরম মনের সুপ্তস্থানে পিপাসায় বিভোর হয়ে তিমির রাতদুপুরে নেত্রজলে ক্লেশ ঘুছাতো। ওদের কিছু সময়ের জন্য ভাব হলেও দূরত্ব হয় খুব তারাতারি। রাব্বিও তার হিমাংসুর কৌমুদিনী ভাব যেন বহুকাল একসাথে পাড়ি জমাবে। বছর পার হলো মাঝখানে অনেক রাগঅভিমান খুনসুটি।
এইতো সেদিন আদালতের ভেতর জজসাহের জন্য শুনানীর অপেক্ষা করছি। টুং শব্দে কেনো এক অপরিচিতার দুই শব্দের মেসেজ আসে। পরিচয় জানার পর আমি হতবাক। একই কক্ষে থাকার পর কখনো বাক্য বিনিময় হয়নি তাই মুখনিশ্রীত না হয়ে অক্ষরের ভাষায় আলাপ হলো। মনের মধ্যে আমতা ভাব তবুও রাব্বি ও পরিজনের কথা জানতে চাইলাম। ওপাশ থেকে জেনো একটা ছবি পেয়ে নিজেই অশ্রুতে চোখ টলমলে অবস্থায় উপনিত হয়েছি। ছবিটা রাব্বীর বিয়ের তবে বধু হিসেবে সেই সহপাঠিনী আর তাদের আটবর্ষের সংসারির কোনো মিল নেই। ভিনদেশে এক মধ্যবয়সী যুবতী। দেখে অনায়াসে অনুমান করা যায় জোড়া সংখ্যার জননী।
আট বছর প্রেম রাগ বিরাগ, ভালোবাসা বিনিময়। আর হিমাংসুর মত মেয়ের প্রথম ভালোলাগার পুরুষটা দুদন্ড সময় নিলো না। অন্যদ্বার গ্রহন করতে। এর চেয়ে অকৃতদার থাকাই শ্রেয়। নারীলোভী পুরুষের এমনটা হয়। সহজে যা পায় তার অবহেলা করে। । পরক্ষণেই মনে হলো শান্তনাই তার কাম্য।
মানুষ মারা গেলে শান্তনা দেয়া যায় কিন্তু মন বা সংসার ভাঙ্গার শান্তনা নেহাত মিথ্যাচার। এমনটা পাপ ও বটে।লোক মুখে শুনি মন ভাঙ্গা আর মসজিদ ভাঙ্গা একই। জীবনের সবচেয়ে কষ্টের মুহূর্ত হচ্ছে মন ভাঙ্গা কষ্ট।সবার সামনে হাসিমুখে থাকলেও, ভালোবাসার মানুষটিকে না পাওয়ার বেদনা তাকে কুড়ে কুড়ে খায়। গভীর রাতে চোখের অশ্রু হয়ে বেরিয়ে আসে লুকিয়ে থাকা মনের ব্যথা।পরিবার পরিজন সকলের বিরুদ্ধে গিয়ে যারা নিজের যৌবনের মৌসুমে কারো অপেক্ষারত হয়ে থাকা যায় তাকে দেখে প্রমান পেয়েছি। প্রিয়জনের জন্য তো অনেকে ক্রান্তিকাল অপেক্ষা করে সেও হয়ত করেছিলো।
আমিও পরোপকারে নিজেকে বিলিয়ে দিতেই শান্তি পাই বাপো তাইতো কারো কষ্ট দেখলে কিছুটা শান্তনা না দিতে পারলেও সময় দেই। অন্তত কষ্টগুলো ভাষায় রুপনিয়ে মনটাকে হালকা করুক।
আর এইজন সেইজনকে তো বলেই বেড়িয়েছি রাব্বি কাজটি ঠিক করেনি। মহাপাপ আর লানত তার উপর। তারই বা দোষ কিসের ছিলো মাসীর সাথে মশকরা করে মাসীর স্বামী হতে হয়েছে। এটা হয়ত প্রকৃতির খেলা। এমনটাই হবে যা স্রষ্টাই ধার্য করেছেন।
এইতো পক্ষ পেরিয়ে মাসে ছুঁই এমন এক দিনে বাসে দাড়িয়ে সিটে বসা প্রেমিক প্রেমিকার ঝগড়া শুনছি মন দিয়ে। আজিমপুর আসতেই ঠিকানা বাসের একদল যাত্রী চেচিয়ে উঠে মামা দারান, ইডেনে নামব। ঝগড়া করা সেই প্রেমিকাও ইডেনের ছিলো তাই প্রেমিকের সিটে বসে মন খারাফের কারন জানতে চাইলাম। জিদান নামের সেই প্রেমিক গর্ব করে হাসতে হাসতে বলছে ভাই আমার প্রিয়তমার মন বিশাল বড়। থমকে বললাম তাহলে ঝগড়া কেনো ভ্রাতা। জবাবে তো আমিই থ। সে জানালো সে থাকা অবস্থায় আরো তিনটা ছেলেকে মনে জায়গা দিয়েছে। অনেক বড় মন That’s বলছে বিয়ে করবে জান, পান,চুন হাবি জাবি। সারাদিন মনের বিশালতার কথা ভাবতে ভাবতে আমারো মন চাইলো আমার সেই সহপাঠিনীর মনের বিশালতা মাপার। যেই কথা সেই কাজ রাব্বিকে দিলাম কল।বেচারা স্ত্রীগমন করে সবে ফ্রেশ হলো। বললো ১০ মিনিট নতুন করেছি বিয়ে, সঙ্গীকে খুশি করতে পারছি না মন আর শরীর দিয়ে।
মিনিট পনেরো সময় পর নিজেই কল দিলো। জানতে চাইলাম কি দোষ ছিলো তাতে, এমন সুন্দুরী ফেলে বিয়ে করলি খালাকে,এটা অন্যায়। আমাকে থ দিয়ে রাব্বীও বললো একই কথা। মনের বিশালতার কাছে সেও খুজেছে আপনজন। তাই এখন পরিণয় হলো আলাদা দুইজন। অনেকগুলো নাম জানতে পেরে খোজ নিতে শুরু করলাম। একে একে বেড়িয়ে এলো অনেক জনের নাম। তাতে কি সব তো আর সত্যি ছিলো না। তবে তাওতো মনের বিশালতা মাপলাম। পরক্ষণে বুঝতে পারি মনের বিশালতাই সব কিছুর কারন।