কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) পাচঁ দফা দাবিতে মধ্যরাতেও আমরণ অনশন করছেন ৫ শিক্ষার্থী। রবিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে শুরু হওয়া এ অনশন প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলমান রয়েছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার, প্রক্টরের অপসারণ, বহিষ্কৃত দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ পাচঁ দফা দাবিতে এ আমরণ অনশনে বসেছেন তারা। টানা ১০দিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পর এবার আমরণে বসেছে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, একই হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সালমান চৌধুরী হৃদয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ইমতিয়াজ শাহরিয়া ও কাজল হোসাইন এবং কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান পলাশ।
আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, পাচঁ দফা দাবিতে ৮ মার্চ থেকে আন্দোলন করে আসছে ছাত্রলীগ ও শিক্ষার্থীরা। ৮ মার্চ শাখা ছাত্রলীগের তিন নেতা মারধরের ঘটনায় শুরু হয় এ আন্দোলন। সেদিন সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম সহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন তারা। পরে পুলিশ প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিলেও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
এদিকে ঘটনার ১১ দিন পরও হামলাকারীদের গ্রেফতার না করায় এবার আমরণ অনশনে বসেন তারা। এদিকে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তারা দাবির প্রেক্ষিতে কোন সুদুত্তর দিতে পারেনি।
এ বিষয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি। তাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য আহ্বায়ন জানিয়েছি। তবে তারা সাড়া দেয়নি।
এদিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন প্রক্টরিয়াল টিম ছাড়াও উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, ডিন ও বিভাগের শিক্ষকরা।
বিকেল সাড়ে ৫টায় অনশনকারী শিক্ষার্থীদেরকে দেখতে এসে স্বান্তনা দিয়ে চলে যান ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান। তবে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর না দিয়েই স্থান ত্যাগ করেন তিনি।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মঈন। এসময় তিনি আন্দোলন তুলে নিতে অনুরোধ করলেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন।
তবে এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, আমি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চাইনা।
এদিকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের দেখতে আসেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সবারই গণতান্ত্রিক অধিকার আছে প্রতিবাদ করার। যেকোন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, যেকোন ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য বা আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষকদের যেমন অধিকার আছে তেমনি শিক্ষার্থীদেরও অধিকার আছে। তাদের প্রতিবাদ জানানোর যে ভাষা সেটা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সাথে, উপাচার্যের সাথে বসবো। তবে কবে বসবো সেটা উপাচার্য বলতে পারবেন।