কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের সাত বছর পূর্ণ হচ্ছে সোমবার (২০ মার্চ)।
সাত বছরে চারবার পুলিশের তদন্ত সংস্থা ও পাঁচবার তদন্ত কর্মকর্তা বদল হলেও খুনিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।
খুনিরা চিহ্নিত না হওয়ায় ভেঙে পড়েছেন তনুর মা আনোয়ারা বেগম। জীবদ্দশায় বিচারের আশা করেন না তিনি।
আনোয়ারা বেগম বলেন, গত শুক্রবার (১৭ মার্চ) মেয়ের মৃত্যুবার্ষিকীকে সামনে রেখে দুই মসজিদে মিলাদ পড়িয়েছি। অন্যান্য বছর পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা একাধিকবার ঘটনাস্থলে আসতেন।
আমাদের সঙ্গেও কথা বলতেন। সর্বশেষ দুই মাস আগে পিবিআইকে একবার ঘটনাস্থলে আসতে শুনেছি। তবে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তনুর মা বলেন, গরিব বলে বিচার পাই না বাবা। আজ আমাদের সুখ নাই। সংসারটা ধ্বংস হয়ে গেছে। সুখের আশায় যে মেয়েরে পালছি, সে মেয়ে আজ নাই। আমাদের দুর্গতির শেষ নাই। মৃত্যুর একদিন আগেও যদি দেখে যেতে পারতাম, মেয়ে হত্যার বিচার পেয়েছি, তাহলে হাশর মাঠে বলতে পারতাম বিচার পেয়েছি।
পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, তনুর বিষয়ে তদন্তের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। আমরা আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছি।
২০১৬ সালের ২০ মার্চ প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হন সোহাগী জাহান তনু। ওইদিন রাতে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের পাওয়ার হাউজের অদূরে ঝোঁপের ভেতর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরদিন তার বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কর্মচারী ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি পরবর্তীতে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ, সিআইডি, কুমিল্লা পিবিআই ও সর্বশেষ ২০২০ সালের নভেম্বরে সেন্ট্রাল পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।
তদন্তে সিআইডি তনুর পোশাকে তিনজনের শুক্রাণুর উপস্থিতি পান বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সুরক্ষিত স্থানে তনুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশ ব্যাপী চাঞ্চল্য ও তীব্র আন্দোলন সৃষ্টি হয়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে গড়ে তোলা হয় তনু চত্বর।