আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছে কুমিল্লা জেলা ডিবি পুলিশ। জটিল ও কঠিন মামলার জট খুলে রহস্য উম্মোচন করে দীর্ঘ মেয়াদী মামলাকে করেছে সংক্ষিপ্ত। এছাড়াও ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাঁজা, হেরোইন, অস্ত্র সহ মাদক উদ্ধার অপরাধীদের গ্রেফতারের সুফল ভোগ করছেন কুমিল্লা জেলার সাধারণ জনগন।
একের পর এক মাদক বিরোধী অভিযানে লন্ডভন্ড জেলার চিহ্নিত মাদকের আস্থানা।
কুমিল্লা জেলার আলোচিত হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার, অপহৃত উদ্ধার, অস্ত্র উদ্ধার, প্রতারক চক্র গ্রেফতার, চোরাই মোটরসাইকেল, চোরাই ইজিবাইক, মিশুক, অটোরিক্সা উদ্ধারসহ রয়েছে নানা সাফল্য। কুমিল্লা ডিবি পুলিশের এমন সাফল্যে তাদের সাধুবাদ জানিয়েছে জেলাবাসী। তাইতো অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ নানা সময় পুলিশ বিভাগ পুরস্কৃত করেছে কুমিল্লা জেলা পুলিশকে। ফলে চৌকস কর্মকর্তাদের হাত ধরে এগিয়ে চলেছে ডিবি পুলিশ। সর্বশেষ গত ৯ মার্চ কুমিল্লা নগরীর মোগলীটুলি থেকে অস্ত্রসহ সামছুদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে। ৬ মার্চ সদর দক্ষিণ দ্যা ফুড ভিলেজ রেস্টুরেন্টে মুক্তিযোদ্ধা ফুড কর্ণারের সামনে ৫৪ কেজি গাঁজাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। ২ মার্চ কুমিল্লায় পুলিশ নিয়োগে এসপি পরিচয়ে প্রতারণার দায়ে ৩ জনকে গ্রেফতার। ২৭ ফেব্রুয়ারী অটোরিক্সা চোর চক্রের ৯ সদস্যকে আটক। ২ ফেব্রুয়ারী ১১টি চোরাই মোটর সাইকেলসহ চোর চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার। ২৯ জানুয়ারী ১টি পাইপগান ১ রাউন্ড কার্তুজসহ ১ জনকে গ্রেফতার। ৮ জানুয়ারী বিদেশী পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন, ৮ রাউন্ডগুলিসহ আরো দুই অপরাধী গ্রেফতার।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান জানান, কুমিল্লা জেলা পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমান মাদকসহ ২৭৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গেলো ফেব্রুয়ারী মাসে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২২০ মামলায় ২৭৭ জন আসামীকে গ্রেফতার করে। এসব অভিযানে ১ হাজার ৪৯২ কেজী গাঁজা, ১৪২৩ বোতল ফেন্সিডিল, ১৫ হাজার ২১৪ পিস ইয়াবা, ৬৮ বোতল বিয়ার, ৭ বোতল হইস্কি, ও স্কাফ সিরাপ ৩২৪ বোতল ও ১৯২ বোতল বিদেশী মদ জব্দ করা হয়েছে।
কুমিল্লা জেলায় তরুণ যুব সমাজকে ধ্বংস করতে মাদকের ঘাটি তৈরীর চেষ্টা করেছে। তাছাড়াও আন্তঃজেলা ডাকাত, ছিনতাইকারী, প্রতারকসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে কুমিল্লা ডিবি পুলিশও সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে। এছাড়াও মাদক বিরোধী এবং জঙ্গিবাদ বিরোধী গণসচেতনতা তৈরী করেও সফল হয়েছে ডিবি পুলিশ। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে প্রায় প্রতিদিনই উদ্ধার হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য এবং আটক হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী, পাঁচারকারী এবং মাদকসেবী যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ডিবি পুলিশের পরিসংখ্যান সূত্রে আরোও জানা গছে, পুলিশের অন্যান্য ইউনিটের তুলনায় বহুলাংশে এগিয়ে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ।
ডিবির অফিসার ইনচাজ রাজেশ বড়ুয়া বলেন, ডিবি পুলিশের কয়েকটি ইউনিট কাজ করছে।
এখানে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তার পরেও আন্তরিকতার সাথে আমরা কাজ করছি। অনেক অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছি। মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সবর্দা ডিবি পুলিশ নিজস্ব গতিতে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যা অব্যাহত থাকবে।
এই বিষয়ে কুমিল্লা বারের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, তুলনামূলক অপরাধ প্রবণতা হ্রাসকরণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দৃশ্যমান ভূমিকা রেখেছে চলতি বছর। এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পুলিশের পাশাপাশি ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান বলেন, প্রতিটি থানায় মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরাও কাজ করছেন। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স অবস্থান একেবারেই স্পষ্ট। বিগত বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছর কুমিল্লায় হত্যাকান্ডের সংখ্যা কম ছিলো। পাশাপাশি প্রতিটি অপরাধকে গুরুত্ব দেওয়ায় কমেছে অন্যান্য অপরাধসমূহও। অধিকাংশ হত্যারহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।